রাজন হত্যার ৪৩ দিনের মাথায় সিলেট সদর উপজেলার
ঘোপালে এক শিশু শ্রমিককে নির্যাতন করে নির্মমভাবে
হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ২০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেল
সোয়া ৪টার দিকে ঘোপালস্থ ফুড মার্ক ব্রেড এন্ড বিস্কুট
ফ্যাক্টরী সংলগ্ন শৌচাগারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রমিক
শিশুর নাম মোঃ আকমল হোসেন (১১)। সে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের দিনমজুর মোঃ
এখলাছ মিয়ার পুত্র।
এ ঘটনায় নিহত আকমলের পিতা এখলাছ মিয়া বাদি হয়ে ২
জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনকে আসামী
করে জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নং- ১৩ (২১-০৮-১৫)। মামলার আসামীরা হচ্ছে- শহরতলীর টুকেরবাজার ঘোপাল এলাকার লন্ডনী বাড়ি ও ফুড মার্ক ব্রেড
এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর মালিক হাজী মোঃ ওহাব আলী (৫৫)
ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলসাঈন গ্রামের মৃত হাসিবের পুত্র
বর্তমানে ঘোপাল ফুড মার্ক ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর
মিস্ত্রি আব্দুর রহমান (৪০)। কিন্তু দু’দিনেও ঐ ফ্যাক্টরীর
মালিক ও মিস্ত্রিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে মামলাটির তদন্ত চলছে।
২১ আগস্ট শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে পুলিশ ময়না তদন্ত
শেষে নিহত শিশু আকমল হোসেনকে তার আত্মীয় স্বজনের কাছে
হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার মাগরিবের পর নামাজের
জানাযা শেষে তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা
হয়। নিহত আকমলের ৪ ভাই ও ২ বোন। ভাইদের মধ্যে আকমল তৃতীয়।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, জীবিকা নির্বাহের লক্ষ্যে
জালালাবাদ থানা এলাকার ঘোপালস্থ ফুড মার্ক ব্রেড এন্ড
বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে শিশু আকমল হোসেন ২ বছর ধরে ১৩শ’
টাকা মাসিক বেতনে চাকুরী করে আসছিল। ঘটনার ৫/৬ দিন
পূর্বে ফ্যাক্টরীর মালিক হাজী মোঃ ওহাব আলী ও মিস্ত্রি আব্দুর রহমানের কাছে আকমলের পিতা এখলাছ মিয়া বকেয়া
বেতনের টাকা চাইতে গিয়ে তাদের সাথে তার কথা
কাটাকাটিসহ মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে
মালিক ওহাব ও মিস্ত্রি আঃ রহমান শিশু আকমল হোসেনকে
নির্যাতন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ আগষ্ট
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওহাব ও আঃ রহমান ফ্যাক্টরীর শৌচাগারে নিয়ে আকমলকে ওয়ালের সাথে সেট করে ব্যাপক
মারধর করে ইটের আদলা দিয়ে মাথা তেঁতলে দিয়ে তাকে
গুরুতর আহত করে। এরপর আকমলের প্রচুর রক্তখরনের ফলে
অবস্থা বেগতিক দেখে দ্রুত তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত
ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঐদিন পুলিশ ওসামানী হাসপাতাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে মর্গের হিমাগারে
রেখে দেয়। এদিকে ঐদিন রাত সোয়া ৮ টার দিকে ছেলের
খবর পেয়ে নিহত আকমলের পিতা ওসমানী হাসপাতালে ছুটে
গিয়ে আকমলের মাথা থেতলানো, মুখ মন্ডলের ডান পাশে ফুলা
ও কান ও নাক দিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে দেখতে পান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার উপ- পরিদর্শক (এসআই) বেনু চন্দ্র দেব জানান, মামলাটির আসল
রহস্য উদঘানের জন্য তদন্ত চলছে এবং আসামীদের
গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন